ডিটেকটিভ আন্তর্জাতিক ডেস্ক
আড়াই মাস ধরে অবরুদ্ধ থাকা কাশ্মিরে এবার শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভ কিংবা অবস্থানও নিষিদ্ধ করেছে পুলিশ। কাশ্মিরের প্রশাসন নির্দেশ জারি করে বলেছে, স্বাভাবিক অবস্থা না ফেরা পর্যন্ত উপত্যকার কোথাও কোনো রকমের সমাবেশ, ধরনা, শান্তিপূর্ণ অবস্থান অথবা বিক্ষোভ দেখানো যাবে না।ভারতীয় গণমাধ্যম এনডিটিভির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গত মঙ্গলবার কাশ্মিরের রাজধানী শ্রীনগরের প্রাণকেন্দ্র লাল চকের অদূরে প্রতাপনগরে রাজ্যের সাবেক মুখ্যমন্ত্রী ফারুক আবদুল্লার স্ত্রী ও বোন এবং রাজ্যের প্রধান বিচারপতি বশির আহমেদ খানের স্ত্রী হাওয়া বশিরসহ সমাজের প্রতিষ্ঠিত নারীরা রাজ্যের বিশেষ মর্যাদা কেড়ে নেওয়া ও রাজ্যকে দুই ভাগ করার প্রতিবাদ জানান। শান্তিপূর্ণ ওই প্রতিবাদের সময় তাদের হাতে ছিল সরকারি সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করে লেখা কিছু পোস্টার। ওই ঘটনার পরই এই অভিনব নিষেধাজ্ঞা জারি করে কাশ্মির প্রশাসন।যদিও পুলিশ কিছুক্ষণের মধ্যেই ওই নারীদের গ্রেপ্তার করে থানায় নিয়ে যায়। সেখান থেকে পাঠানো হয় জেলখানায়। পরে মুচলেকা লিখিয়ে তাদের ব্যক্তিগত জামিনে ছেড়ে দেওয়া হয়।ওই বিক্ষোভ ও গ্রেপ্তারির খবর দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে। উপত্যকার পরিস্থিতি যে স্বাভাবিক নয় এবং সরকারি সিদ্ধান্ত যে সেখানকার শান্তিপ্রিয় মানুষ অনুমোদন করছেন না, ওই বিক্ষোভে তা আরও একবার প্রমাণ হয়। সরকারের দাবি যে অসাড়, তাও প্রমাণ হয়।জম্মু-কাশ্মির পুলিশের মহাপরিচালক দিলবাগ সিং এ ব্যাপারে এনডিটিভিকে জানান, এই ধরনের বিক্ষোভ সমাবেশের অনুমতি দেওয়ার আগে আমরা চাই পরিস্থিতি সম্পূর্ণ স্বাভাবিক করে তুলতে। তার আগে কোথাও কাউকে আর কোনো রকমের বিক্ষোভ বা প্রতিবাদ করতে দেওয়া হবে না। তা সে শান্তিপূর্ণ ধরনা বা অবস্থান যাই হোক না কেন।দিলবাগ বলেন, নারী বিক্ষোভকারীদের হাতে এমন কিছু পোস্টার ছিল যা আপত্তিজনক, প্ররোচণামূলক। তার মতে, মানুষ শুধু ভাষণেই প্ররোচিত হয় না, পোস্টার প্ল্যাকার্ড দেখে ও পড়েও হতে পারে। তাই এই সতর্কতা অবলম্ব করা হচ্ছে।উল্লেখ্য, গত ৫ আগস্ট ভারতের বর্তমান হিন্দুত্ববাদী বিজেপি সরকার দেশটির সংবিধানের ৩৭০ ধারা বাতিল করার মাধ্যমে জম্মু-কাশ্মির রাজ্যের মর্যাদা কেড়ে নেয়। সেইসঙ্গে রাজ্যটিকে কেন্দ্রশাসিত দুটি অঞ্চলে ভাগ করে। তার পর থেকেই অবরুদ্ধ অবস্থায় রয়েছেন কাশ্মিরের জনগণ। সরকার কাশ্মিরের পরিস্থিতি স্বাভাবিক দাবি করলেও বাস্তবে তা প্রমাণ করতে পারেনি।